You are currently viewing সাইকেল চালানোর উপকারিতা | সাইক্লিং করার উপকারিতা
সাইকেল চালানোর উপকারিতা

সাইকেল চালানোর উপকারিতা | সাইক্লিং করার উপকারিতা

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

নিয়মিত সাইকেল চালানোর উপকারিতা অনেক। বাঁধা গতের ব্যায়ামের মধ্যে না পড়লেও নিয়মিত দৌড়াদৌড়ি বা হাঁটাহাঁটির বিকল্প হতে পারে সাইকেল চালানো। সাইকেল চালানো এমন এক শারীরিক কসরত যা আপনার শরীর ও মন উভয়কেই তাজা ও ফিট রাখে।

তাছাড়া স্বল্প বা মাঝারি দূরত্বে নিত্য যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে সাইকেলের ব্যবহার আছেই। যা এই করোনা পরিস্থিতিতে আরও বেড়েছে। পরিবেশগত দিকে থেকে অন্যান্য যানবাহনের তুলনায় সাইকেল চালানো যেমন উপকারী, তেমনি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও সাইক্লিং করার অনেক উপকারিতা আছে। নীচের যে কোনো একটি উপকারিতার কথা ভেবে সাইকেল চালানো শুরু করুন আজ থেকেই। অন্যান্য উপকারিতার কথা তখন নিজেই বুঝতে পারবেন।

Table of Contents

সাইকেল চালানোর উপকারিতা

সাইকেল চালানোর উপকারিতা বা সাইক্লিং করার উপকারিতা
সাইকেল চালানোর উপকারিতা

১) সাইকেল চালালে মানসিক সুস্থতার উন্নতি হয়

যে সমস্ত মানুষ ফিজিক্যালি বেশি এক্টিভ তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক ভাবে বেশি সুস্থ। তাঁদের ক্ষেত্রে Wellbeing Score অন্যদের তুলনায় অনেকটাই বেশি। সাইকেল চালানো এমনই এক ফিজিক্যাল এক্টিভিটি, যা শরীরের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায়। আমাদের মানসিক সুস্থতা অ্যাড্রিনালিন এন্ডরফিন হরমোনদুটির ক্ষরণের ওপর অনেকটা নির্ভর করে। সাইকেল চালানোর ফলে এই হরমোন দুটির ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়।

আবার গবেষণায় দেখা গেছে, সাইকেল চালানোর ফলে মানসিক উদ্বেগ ও দুশ্চিন্তা প্রায় ৪০ শতাংশ কমে। সাইকেল চালানো ও সামনের রাস্তার দিকে মনোযোগ দেওয়ার ফলে নিত্যদিনের দুশ্চিন্তা থেকে সাময়িক স্বস্তি মেলে। যা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। এমনকি সাইকেল চালানোর ফলে মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও কমে।

২) সাইকেল চালানোর ফলে উচ্চ রক্তচাপ কমে

উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন হল বহু রোগের উৎপত্তির প্রাথমিক ধাপ। আর এই উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাইকেল চালানোর মতো এক্সারসাইজ খুবই কাজের।

নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে বেশ কিছুদিন পর থেকেই উচ্চ রক্তচাপ কমতে লক্ষ্য করা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত সাইকেল চালানোর তিন মাস পর উচ্চ রক্তচাপ ৪.৩ শতাংশ এবং ছয় মাস পর উচ্চ রক্তচাপ ১১.৮ শতাংশ কমতে পারে।

বিশেষত টাইপ-২ ডায়াবেটিস থাকা মানুষের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাইকেল চালানো খুবই উপকারি।

আরও পড়ুন :
(১) উচ্চ রক্তচাপের কারণ
(২) উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও সমস্যা
(৩) উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের উপায়

৩) সাইকেল চালালে অতিরিক্ত ওজন কমে

পরিকল্পিত ডায়েট এবং নিয়মিত এক্সারসাইজ ওজন কমানোর মূলমন্ত্র। এক্সারসাইজ হিসাবে সাইকেল চালানো মাধ্যমেও ওজন কমানো সম্ভব। সাইকেল চালানোর ফলে মেটাবলিক রেট বাড়ে। এক ঘন্টা সাইকেল চালানোর ফলে ৪০০ ক্যালোরি থেকে ১০০০ ক্যালোরি পর্যন্ত ক্যালোরি খরচ হয়। কতক্ষণ ধরে কত স্পিডে সাইকেল চালানো হচ্ছে, তার ওপর এটা নির্ভর করে। সাইকেলের সবথেকে বড় সুবিধা হল নিজের ক্ষমতা অনুযায়ী শারীরিক কসরত বাড়ানো-কমানো সম্ভব।

বেশ কয়েক ঘন্টা খালি পেটে থাকার পর নিয়মিত সাইকেল চালালে পেটের ফ্যাট ঝরতে বাধ্য। স্বভাবতই অতিরিক্ত ওজন কমে। তবে সাইকেল চালানোর পরে পরেই বেশি খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

আরও পড়ুন :
মোটা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধির কারণ
ওজন কমানোর কার্যকরী কিছু উপায়

৪) নিয়মিত সাইকেল চালানো সুঠাম পেশি গঠনে সাহায্য করে

সাইকেল চালালে শুধু ওজন কমে তাই নয়, পেশিও সুঠাম ও শক্তিশালী হয়। শরীরের নিচের অংশের গঠনে ও পায়ের পেশি শক্তিশালী করতে সাইকেল চালানোর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। সাইকেল চালানোর ফলে বিশেষত গ্লুটস, হ্যামস্ট্রিংস এবং কোয়াডস পেশিগুলি উন্নত হয়। নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে পা দুটি শক্তিশালী হয়। তাছাড়া হাত ও পেটের পেশির সুঠাম গঠনেও সাইকেল চালানোর ভূমিকা আছে।

৫) সাইকেল চালানোর ফলে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে

সাইকেল চালানোর ফলে ফুসফুসের ক্ষমতা বাড়ে। কার্ডিও-রেসপিরেটরি স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সাইকেল চালানোর ভূমিকা অপরিসীম। সাইকেল চালানোর ফলে ফুসফুসের বায়ুধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

এই করোনা পরিস্থিতিতে ফুসফুসকে শক্তিশালী রাখা খুবই দরকার। কারণ করোনা ভাইরাসের আক্রমণে ফুসফুস বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই অন্যান্য শারীরিক কসরতের মতোই সাইকেল চালানো ফুসফুসের জন্য বেশ উপযোগী। তাছাড়া সাইকেল চালানোর আর একটি সুবিধা হল, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার না করে প্রয়োজনে সাইকেলেই কম-বেশি দূরত্ব ভ্রমণ করা যায়। ফলে করোনা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনাও কমে। প্রকারান্তরে ফুসফুস ভালো থাকে।

৬) সাইকেল চালানোর ফলে পরিপাক ভালো হয়

সাইকেল চালালে যেমন ক্যালোরি খরচ হয়, তেমনি পরিপাক ভালো হয়। সাইকেল চালানোর ফলে পরিপাক তন্ত্রে খাদ্যের মুভমেন্ট ভালো হয়। ফলে খাদ্যের পাচন ভালো হয়। তাছাড়া সাইকেল চালানোর ফলে ঘাম হওয়ার জন্য অপাচ্য বর্জ্য থেকে জল শোষণ বেশি হয়।

৭) সাইকেল চালানোর ফলে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি কমে

সাইকেল চালানোর ফলে হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকিও কমে। গবেষণা বলছে, যাঁরা প্রতি সপ্তাহে অন্তত ২০ মাইল সাইকেল চালান তাঁদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা অন্যদের (যাঁরা কোনো প্রকার এক্সারসাইজ করেন না) তুলনায় ৫০% কম।

সাইকেল চালানোর ফলে উচ্চ রক্তচাপ যেমন কমে, তেমনি কোলেস্টেরলও নিয়ন্ত্রণে থাকে। নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ে এবং খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমে।

সাইকেল চালানোর ফলে উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ থাকার জন্য হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

আরও পড়ুন : কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু উপায়

৮) সাইকেল চালালে ক্যানসারের ঝুঁকি কমে

এক্সারসাইজ তথা শরীরচর্চা ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি কমায়। সাইকেল চালানো এক্ষেত্রে সব থেকে এগিয়ে। গবেষণায় দেখা গেছে, সাইকেল চালালে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি ৪৬% কমে। এমনকি ক্যানসার হলেও মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০% কমে। নিয়মিত এক্সারসাইজ বা সাইকেল চালানো পোস্টমেনোপজাল সময়ে মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটাই কমায়।

৯) সাইকেল চালানোর ফলে আপনার যৌন জীবনও উন্নত হয়

শরীরচর্চা বা এক্সারসাইজ যৌন জীবনকে উন্নত করে। বেশি দিন যৌবন ধরে রাখতেও সাহায্য করে। নিয়মিত সাইকেল চালালে কার্ডিওভাস্কুলার সিস্টেম উন্নত হয়, শরীর ফিট থাকেন। সমীক্ষা বলছে, অন্যান্য অ্যাথলিকদের তুলনায় সাইক্লিস্টদের প্রতি বিপরীত লিঙ্গের মানুষ সহজেই আকৃষ্ট হয়। তাছাড়া নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে স্ট্রেস হরমোন নিয়ন্ত্রিত হয়, যা যৌন জীবনকে প্রভাবিত করে।

সাইকেল চালানোর ফলে শরীরের নিম্নাংশের পেশিগুলি শক্তিশালী হয়। ফলে সাইক্লিস্টরা সেক্সুয়ালি বেশি ফিট হয়। একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে যে সমস্ত পুরুষ সাইকেল চালান অন্যদের তুলনায় তাঁদের যৌন ক্ষমতা বেশি। সমবয়সী অন্যদের তুলনায় ৫ বছর বেশি তরুণ লাগে। নিয়মিত সাইকেল চালালে মহিলাদের মনোপজ কয়েক বছর পর্যন্ত পিছিয়ে যেতে পারে। যা মহিলাদের যৌন জীবনকে দীর্ঘায়িত করে।

১০) সাইকেল চালানো ঘুমের জন্য ভালো

নিয়মিত সাইকেল চালানো নিরবিচ্ছিন্ন ঘুমের জন্য ভালো। বিশেষত ৪০ বছর থেকে ৬০ বছর বয়সে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা, ওজন বৃদ্ধি, শরীর ফিট না থাকার কারণে ঘুমের সমস্যা শুরু হয়। কিন্তু নিয়মিত এক্সারসাইজ করলে, না সাইকেল চালালে উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা কমে। শরীর ফিট থাকে। যা প্রকারান্তরে আপনার ঘুমের জন্য ভালো।

১১) সাইকেল চালানোর ফলে মস্তিষ্কের ক্ষমতা বাড়ে

সাইকেল চালানোর ফলে শরীরে নিম্নাংশে যেমন রক্তপ্রবাহ বাড়ে। তেমনি মাথা তথা মস্তিষ্কেও রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পায়। সাইকেল চালানোর সময় মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ প্রায় ২৮% বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কের কিছু কিছু অংশে এমনকি ৭০% বৃদ্ধি পায়। মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের নিউরোনগুলি বেশি কর্মক্ষম হয়। বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমে।

১২) সাইকেল চালানোর ফলে অনেক সময় বাঁচে

স্বল্প বা মাঝারি দূরত্ব অতিক্রমের জন্য পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহারের পরিবর্তে সাইকেল ব্যবহার করলে অনেক সময় বাঁচে। বাস বা ট্রেন ধরার জন্য বাড়ি থেকে নির্দিষ্ট জায়গায় (বাসস্ট্যান্ড/স্টেশন) যাওয়া-আশা ও অপেক্ষা করতে অনেকটা অতিরিক্ত সময় নষ্ট হয়। সেই সঙ্গে ট্রাফিক জ্যামের ঝামেলা তো আছেই। পরিবর্তে স্বল্প বা মাঝারি দূরত্বে সরাসরি সাইকেলে চলে গেলে সময় কম লাগে। সঙ্গে এক্সারসাইজও হয়ে যায়। তাছাড়া নিজের খরচও সাশ্রয় হয়।

১৩) সাইকেল চালানোর ফলে সামাজিক সম্পর্ক ও সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধি পায়

নিজের এলাকায় বা পার্শ্ববর্তী এলাকায় সাইকেল চালানোর ফলে সামাজিক যোগাযোগ ও পরিচিতি বৃদ্ধি পায়। পারস্পরিক ভাবের আদান-প্রদান, আলাপচারিতায় সুবিধা হয়। নিজের সমাজগত বন্ডিং মজবুত হয়। নিজে হাসিখুশি থাকার অনেক রসদ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে কোনো সাইক্লিং ক্লাব বা গ্রুপে যোগ দেওয়ার ফলে নতুন নতুন অভিজ্ঞতা হয়, এডভেঞ্চারের স্বাদ পাওয়া যায়। নতুন নতুন বন্ধুত্ব ও স্মৃতির সৃষ্টি হয়। যা আমাদের মুক্ত মানসিক বিকাশে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

১৪) সাইকেল ব্যবহারে পরিবেশ দূষণ হয় না

সাইকেল হল এমন এক বাহন যার জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। ফলে পরিবেশে নতুন করে কার্বন-ডাই-অক্সাইড যোগ হয় না। অর্থাৎ আপনি নিত্য প্রয়োজনে সাইকেল ব্যবহার করার মাধ্যমে বায়ু দূষণ ত্বরান্বিত হতে দিচ্ছেন না। আবার অন্যান্য যানবাহন যে পরিমান শব্দ দূষণ করে, সাইকেল সেই তুলনায় খুবই কম শব্দ সৃষ্টি করে। বেশি সংখ্যক মানুষ সাইকেল ব্যবহার করলে বায়ু ও শব্দ দূষণ তথা পরিবেশ দূষণ কিছুটা হলেও কমতে পারে।

তাছাড়া অন্যান্য যানবাহনে (ইলেকট্রিক ভেহিকেল-সহ) যে ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়, সেগুলিও বেশ কিছু দিন পর বর্জ্য হিসাবে পরিবেশে রয়ে যায়। যা পরিবেশ দূষণের আরেকটি কারণ। সাইকেলে সেই ঝামেলাও নেই।

অন্যান্য যানবাহনের ধাক্কায় প্রচুর পরিমাণ পশু-প্রাণী মারা যায়। সাইকেলে সেই সব ধাক্কা এড়ানো যায় সহজেই।

সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে সতর্কতা

অনেকে মনে করেন, সাইকেল বাহন হিসাবে নিরাপদ নয়। পথ-দুর্ঘটনার সম্ভবনা বেশি। কিন্তু সম্প্রতি ইউরোপীয় দেশগুলিতে পথ-দুর্ঘটনার পরিসংখ্যান বা তথ্য বিশ্লেষণ করে সাইকেলের সপক্ষেই রায় গেছে। তথ্যে দেখা গেছে, যে সমস্ত দেশে বেশির ভাগ মানুষ সাইকেলে যাতায়াত করেন সেখানে সাইকেল দুর্ঘটনা কম হয়। আবার যেখানে আরোহীর সংখ্যা কম সেখানে দুর্ঘটনা বেশি।

তবে সাইকেলকে নিরাপদ মনে না করারও বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। যাঁর অন্যতম কারণ অসচেতনতা, নিরাপত্তা বিধি ও ট্রাফিক আইন মেনে না চলা। সঙ্গে আমাদের মতো দেশে সাইকেলের জন্য পর্যাপ্ত সাইকেল লেন না থাকা। সেই সঙ্গে শারীরিক সুস্থতার কথা মাথায় রেখে সাইকেল চালানোর সময় আরও কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার। তাই সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু সতর্কতা মেনে চলা উচিত। যেমন –

  • সাইকেল নিয়ে ব্যস্ত রাস্তায় যাওয়ার আগে অবশ্যই হেলমেট পড়ুন। তথ্য বলছে, মাথায় হেলমেট থাকলে সাইকেল দুর্ঘটনায় মাথায় আঘাত পাওয়ার সম্ভবনা ৫০% হ্রাস পায়।
  • নিজের উচ্চতা অনুযায়ী সাইকেল পছন্দ করা উচিত। অন্যথায় সাইকেল চালাতে অস্বস্তি বোধ হবে। শারীরিক ধকলও বেশি হবে।
  • সুবিধাজনক সাইকেল নেওয়ার পাশাপাশি সুবিধাজনক পজিশনে সাইক্লিং করা উচিত। প্রয়োজনে সাইক্লিং স্পেশালিস্টের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে।
  • ট্রাফিক সিগন্যালিং সিস্টেম ও আইন সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।
  • সম্ভবপর হলে বেশি যানবাহন চলে এমন রাস্তার পরিবর্তে কম কোলাহলযুক্ত রাস্তা ব্যবহার ব্যবহারের চেষ্টা করা। দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমার সাথে সাথে বায়ুদূষণজনিত সমস্যাগুলোও কিছুটা এড়ানো যায়।
  • সাইক্লিংয়ের জন্য নির্দিষ্ট ধরণের পোশাক পরিধান করার কথা বলা হয়ে থাকে। ঢিলে-ঢালা পোশাক পরিধান করলে, সাইকেলের চেনে জড়িয়ে দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। উজ্জ্বল রঙের ও রিফ্লেক্টিভ কাপড় দেওয়া বস্ত্র পরিধানের কথাও বলা হয়। বিশেষত রাত্রি বেলায়।

কারা সাইকেল চালাবেন না?

কোনো ধরনের শারীরিক আঘাত/অসুবিধা থাকলে সাইকেল না চালানোই ভালো। আঘাত সুস্থ হওয়ার পরই সাইকেল চালানো উচিত।

অন্যান্য শারীরিক সমস্যাজনিত কারণে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন। সাইকেল চালানোর ফলে অন্য কোনো সমস্যা মাথাচাড়া দেবে কিনা, জেনে নিন। চোখে কম দেখা, শারীরিক ব্যালান্স রাখতে না পারা, কানে কম শোনার সমস্যা থাকলে সাইকেল না চালানোই ভালো। সাইকেল চালালেও, সেক্ষেত্রে অতিরিক্ত সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

শরীর ও মনের জন্য সাইকেল চালানোর উপকারিতা যেমন আছেই, তেমনি পরিবেশগত দিক থেকেও এটি উপযোগী। তাছাড়া ভারত-বাংলাদেশের মতো আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে সাইকেলের ভূমিকা অপরিসীম। অনেক পরিবারের অর্থনীতি অনেকটাই সাইকেল কেন্দ্রিক।

দূষণমুক্ত পরিবেশবান্ধন সাইকেলের নানাবিধ উপকারিতা, সহজলভ্যতা ও জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখে ২০১৮ সালে ইউনাইটেড নেশন ৩ জুন তারিখটিকে World Bicycle Day হিসাবে ঘোষণা করেছে।

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

This Post Has 6 Comments

মন্তব্য করুন