You are currently viewing হঠাৎ করেই মোটা হয়ে যাচ্ছেন? জেনে নিন মোটা হওয়ার বা ওজন বৃদ্ধির কারণ
মোটা হওয়ার বা ওজন বৃদ্ধির কারণ

হঠাৎ করেই মোটা হয়ে যাচ্ছেন? জেনে নিন মোটা হওয়ার বা ওজন বৃদ্ধির কারণ

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

বর্তমান সময়ে আমরা অনেকেই নিজেদের ওজন বৃদ্ধি বা অতিরিক্ত ওজন নিয়ে খুঁতখুঁতে। কিন্তু ওজন কমানোর শত চেষ্টা করেও অনেকেই বিফল। আবার অনেকের অভিযোগ নিয়ম মেনে ডায়েট করা হচ্ছে, শরীরচর্চা বা যোগা সবই হচ্ছে – অথচ ওজন কমছে না! হিসাব কষে নামমাত্র খাওয়া সত্ত্বেও ওজন হুড় হুড় করে বেড়ে যাচ্ছে, হঠাৎ করেই যেন আরও মোটা হয়ে যাচ্ছেন। তবে সমস্যার সমাধানের থেকেও বেশি প্রয়োজন এই সমস্যার কারণ অনুসন্ধান করা। তবেই সমস্যার মূলে গিয়ে, আপনি নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন। আসুন, মোটা হওয়ার বা ওজন বৃদ্ধির কারণগুলি একে একে জেনে নিন –

মোটা হওয়ার বা ওজন বৃদ্ধির কারণ

১) অলস জীবনযাত্রা –

শারীরিক ও মানসিক অলসতা মোটা হওয়া বা ওজন বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ। চোখ-কান খোলা রাখলেই দেখবেন সাধারণত যাঁরা ব্যস্ততার মধ্যে জীবন কাটান বা কায়িক পরিশ্রম করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে কম মোটা হন। অলস ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে খাদ্যের মাধ্যমে গৃহীত ক্যালোরির খরচ না হওয়ায় তা জমতে থাকে এবং ওজন বৃদ্ধি হয়। খেয়াল করে দেখবেন, অধিকাংশ খেলোয়াড় রিটায়ার্ড হওয়ার পর হঠাৎ করেই মোটা হয়ে যান। আবার, যাঁরা সাধারণত ডেস্কে বসে কাজ করেন, শারীরিক পরিশ্রম না হওয়ার কারণে মোটা হয়ে যান।

২) অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস –

ওজন বৃদ্ধি তথা মোটা হয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস একটি বড়ো কারণ। আপনি হয়তো রোগা হওয়ার আশায় সকালের ব্রেকফাস্ট বাদ দিলেন বা অন্য কোনো মিল বাদ দিলেন। এতে উপকার হওয়ার পরিবর্তে অপকারই বেশি হবে। ব্রেকফাস্ট বাদ দিলে ওজন কমার পরিবর্তে মেদবৃদ্ধি বেশি হবে। খাবার না খাওয়ার জন্য আপনার দেহের মেটাবলিজম কমে যায়, যা মোটা হওয়ার একটি অন্যতম কারণ। তাই নির্দিষ্ট সময় অন্তর পরিমিত খাবার খান। তাছাড়া কোল্ড ড্রিংকস, চিপস, বিভিন্ন প্যাকেটজাত খাবার, ফাস্ট ফুড খাওয়ার ফলেও ওজন বৃদ্ধি হয়।

৩) তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়া –

বিশেষজ্ঞদের মতে খাওয়ার সময় আমাদের পাকস্থলী ভর্তি হল কি, সেই খবর আমাদের দেহের প্রধান কার্যালয় মস্তিষ্কে পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় লাগে। তাই তাড়াহুড়ো করে খেলে আপনি প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেলেন। ফলে মেদ জমতে শুরু হয় ও ওজন বৃদ্ধি হয়।

৪) প্রেগন্যান্সি বা মাতৃত্ব –

মেয়েদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে ওজন বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হল প্রেগন্যান্সি বা মাতৃত্ব। প্রেগন্যান্ট ব মাতৃত্বকালীন সময়ে অপত্য শিশুর কথা ভেবে সাধারণত বেশি খায়, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ। তবে এ নিয়ে ন্যূনতম ভয় পাওয়ার কিছু নেই।

৫) হরমোনের তারতম্য –

অনেক মহিলাই ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সে এসে একটু মোটা হয়ে যান। মেনোপজের এই সময়কালে ইস্ট্রোজেনের নিঃসরণ কমতে থাকে। ফলে মহিলাদের তলপেট ও নিতম্বে মেদ জমে ওজন বৃদ্ধি হয়। তাছাড়া যে সমস্ত মহিলার পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম (PCOS) আছে, হরমোনের তারতম্যের কারণে তাঁরাও মোটা হয়ে থাকেন। থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও অনেকে মোটা হয়ে যান। এইসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

৬) মেডিকেশন –

বেশ কিছু ওষুধ সেবনের কারণেও হঠাৎ ওজন বৃদ্ধি হতে পারে। মানসিক রোগ বা অবসাদের ওষুধ ব জন্মনিয়ন্ত্রক পিল নেওয়ার কারণেও ওজন বৃদ্ধি হয়।

৭) শরীরের বিভিন্ন জায়গায় জল জমা –

হঠাৎ করেই ওজন বৃদ্ধির আরও একটি কারণ হল দেহের বিভিন্ন জায়গায় যেমন হাত, পা, মুখ, পেট প্রভৃতি জায়গায় জল জমা, যা ‘ইডিমা’ নামে পরিচিত। সাধারণত হার্টের সমস্যা, কিডনির সমস্যা বা লিভারের সমস্যার কারণে এটি হতে পারে।

৮) ইনসোমনিয়া –

গবেষণায় দেখা গেছে, যাঁরা ইনসোমনিয়ায় ভুগছেন, তাঁদের ওজন বৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। ঘুমে ব্যাঘাত বা অনিয়মিত ঘুমের কারণে খাদ্যাভ্যাস এবং মুডের পরিবর্তন হয়, যা ওজন বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ।

তবে, ওজন বৃদ্ধি নিয়ে অযথা ভয় পাবেন না। চরম ব্যস্ততার মাঝেও নিজেকে তথা নিজের শরীর ও মন উভয়কেই সময় দিন। আপনি যা কিছুই করছেন, তার উৎকর্ষতা আপনার শরীর ও মনের ভালো থাকার ওপর অনেকটাই নির্ভর করছে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে আপনার শারীরিক এবং মানসিক সুস্থতার প্রতি খেয়াল রাখাও আপনার আশু প্রয়োজন। প্রয়োজনে চিকিৎসক এবং ডায়াটিসিয়ানের পরামর্শ নিন। ওজন কমানোর উপায়গুলি আরও ভালোভাবে জানতে পড়তে পারেন আমাদের এই লেখাটি – ওজন নিয়ে চিন্তিত? রইল ওজন কমানোর কিছু কার্যকরী উপায়


ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

This Post Has 6 Comments

  1. তাড়াতাড়ি খাওয়া আমার অভ্যাস। যদিও মোটা হচ্ছি না। কিন্তু বিষয়টা জানলাম যে দ্রুত খেলে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করুন