You are currently viewing বিয়ের আগে কী কী মেডিকেল টেস্ট জরুরী? জেনে নিন এখনই।
বিয়ের আগে কী কী মেডিকেল টেস্ট জরুরী, জেনে নিন এখনই।

বিয়ের আগে কী কী মেডিকেল টেস্ট জরুরী? জেনে নিন এখনই।

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

বিবাহ সম্পর্কে আবদ্ধ হয়ে আপনি যাঁর সঙ্গে বাকি জীবন অতিবাহিত করতে চাইছেন, তাঁর এবং আপনার বেশ কিছু মেডিকেল টেস্ট বিয়ের আগেই করে নেওয়া জরুরী। বিবাহ একটি প্রতিশ্রুতি – ভালো থাকার ও ভালো রাখার। তাই বিয়ে প্রেম করেই হোক, বা দেখা-শোনা করেই হোক এই মেডিকেল টেস্টগুলি করানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

বিয়ের আগে মেলামেশা নিজেদের মন বুঝে নিতে সামান্য হলেও সাহায্য করে। তেমনি এই মেডিকেল টেস্টগুলি নিজেদের এবং ভবিষ্যত অপত্য সন্তানের স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানতে সাহায্য করে। সুখী ও স্বাস্থ্যকর বিবাহিত জীবনের জন্য এই মেডিকেল টেস্টগুলি করানো শুধু ডাক্তারদের উপদেশ নয়। বরং এগুলি অত্যাবশ্যক হওয়া উচিত।

বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্টগুলি করানো অনেকেই অবাঞ্ছিত মনে করেন। টেস্টগুলি করাতে দ্বিধাবোধ করেন। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, দেখা-শোনা করে বিয়ে তথা অ্যারেঞ্জ ম্যারেজের ক্ষেত্রে মেডিকেল টেস্টের থেকে ধর্ম-জাতি-কুষ্ঠী বেশি প্রাধান্য পায়। আবার প্রেম করে বিয়ের ক্ষেত্রে উভয়ের মেডিকেল টেস্ট যে করানো জরুরী, সেটাকে অধিকাংশক্ষেত্রেই ধর্তব্যের মধ্যে রাখা হয় না। কিন্তু টেস্টগুলি করা থাকলে ভবিষ্যতে অনেক অবাঞ্ছিত ও অনাবশ্যক স্ট্রেস এবং সমস্যা এড়িয়ে যাওয়া যায়। প্রয়োজনে সঠিক চিকিৎসা নিতেও সুবিধা হয়।

বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট জরুরী কেন?

যাঁরা খুব সম্প্রতি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন, তাঁদের জন্য বেশ কিছু মেডিকেল টেস্ট করানো অত্যন্ত আবশ্যক। কারণ যে কোনো প্রকারের শারীরিক অক্ষমতা আপনার বিবাহিত জীবনকে অসুখী করে তুলতে পারে। আবার আপনাদের অপত্য সন্তানের রোগহীন সুস্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করছে আপনাদের মেডিকেল স্ট্যাটাসের ওপর।

  • যদি উভয়ের মধ্যে যে কোনো একজনের কোনো সংক্রামক যৌন রোগ (যেমন সিফিলিস, গনোরিয়া ইত্যাদি) বা হেপাটাইটিস বি বা HIV থেকে থাকে তবে ওপর জন্য আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই বেড়ে যায়।
  • আপনার অপত্য সন্তানের অনেক অবাঞ্ছিত রোগ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য মেডিকেল টেস্ট অবশ্যই করানো উচিত। থ্যালাসেমিয়া, সিকল সেল অ্যানিমিয়া, হিমোফিলিয়া প্রভৃতি রোগ গুলি এড়াতে বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্ট করানো খুবই জরুরী।
  • বিবাহের আগে মেডিকেল টেস্ট অনেক জেনেটিক ডিসঅর্ডার নির্ণয়ে সহায়তা করে।
  • বিয়ের আগেই মেডিকেল টেস্ট ভবিষ্যতের অনেক সামাজিক ও মনস্তাত্ত্বিক পীড়া এড়িয়ে যেতে সহায়তা করে। তাছাড়া দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর থেকে অনেক বাড়তি বোঝা কমে যায়।
  • উভয়ের ফার্টিলিটি টেস্টের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তাঁরা সন্তানের বাবা-মা হতে পারবেন কি না। এবং যদি না হতে পারেন, তবে বিয়ে-পরবর্তী সময়কালে মানসিক ও সামাজিক স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে একে অপরকে কতটা সহযোগিতা করতে পারবেন, সে সম্পর্কে বিয়ের আগেই নিশ্চিত হওয়া যেতে পারে।
  • বিয়ের আগেই একে অপরের পারিবারিক তথা জেনেটিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে জানার ফলে একে অপরের স্বাস্থ্য, খাদ্যাভ্যাস, জীবনচর্চার খেয়াল রাখতে সুবিধা হয় এবং প্রয়োজনে সঠিক সময়ে সাবধানতা অবলম্বন করা যায়।

বিয়ের আগে কী কী মেডিকেল টেস্ট করা উচিত?

বিয়ের আগে পরস্পরকে ভালো করে জেনে নেওয়া খুবই প্রয়োজনীয়। এক্ষেত্রে শুধু মনের মিল হলেই হবে না, শারীরিক অবস্থাও জেনে নেওয়া উচিত। না হলে ভবিষ্যতে বা ভবিষ্যত প্রজন্মের মধ্যে বিভিন্ন সমস্যা যেমন দেখা দিতে পারে, তেমনি নিজেদের মধ্যেও সৃষ্টি হতে পারে নানান সমস্যা। এমনকি ডিভোর্স পর্যন্তও গড়াতে পারে সেই বিষয়। তাই, নিম্নলিখিত টেস্টগুলি বিয়ের আগে অবশ্যই করিয়ে নিন –

রক্তের গ্রুপ নির্ণয় টেস্ট :

বিয়ের আগে উভয়ের রক্তের গ্রুপ অবশ্যই জেনে নেওয়া উচিত। রক্তের গ্রুপ যাই হোক না কেন, বিবাহ-পরবর্তী জীবনে উভয়ের কোনো অসুবিধাই হবে না। বরং রক্তের গ্রুপ জানা থাকায় পরবর্তীকালে যে কোনো পরবর্তীকালে যে কোনো আপৎকালীন পরিস্থিতিতে রক্ত সঞ্চালনে সুবিধা হয়।

তবে আপনাদের রক্তের Rh ফ্যাক্টরের ওপর আপনাদের সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা সৃষ্টি হবে কি না তা নির্ভর করছে। সন্তান গ্রহণের ক্ষেত্রে মা ও বাবা উভয়েই যদি Rh পজিটিভ বা উভয়েই Rh নেগেটিভ হন, তবে কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয় না। এমনকি বাবা Rh নেগেটিভ ও মা Rh পজিটিভ হলেও সব ঠিক থাকে। সমস্যা বা জটিলতা সৃষ্টি হয় যখন মা Rh নেগেটিভ ও বাবা Rh পজিটিভ গ্রুপের হয়। প্রথম বাচ্চার ক্ষেত্রে কোন জটিলতা দেখা না গেলেও দ্বিতীয় বাচ্চার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা যায়। যেমন দ্বিতীয় বাচ্চাটির জন্ডিস, লিভারের সমস্যা, অ্যানিমিয়া, ইরাইথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস, কারনিক্টেরাস থাকতে পারে; এমনকি মৃত্যুও হতে পারে। তবে সঠিক সময়ে উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যাও এড়ানো সম্ভব।

স্বামীর রক্তের গ্রুপস্ত্রীর রক্তের গ্রুপ সন্তানের অবস্থা
Rh পজিটিভ (Rh+)Rh পজিটিভ (Rh+)সুস্থ সন্তান
Rh নেগেটিভ (Rh-)Rh নেগেটিভ (Rh-)সুস্থ সন্তান
Rh নেগেটিভ (Rh-)Rh পজিটিভ (Rh+)সুস্থ সন্তান
Rh পজিটিভ (Rh+)Rh নেগেটিভ (Rh-)প্রথম সন্তান সুস্থ,
পরবর্তী সন্তান মৃত বা অসুস্থ

অর্থাৎ, Rh পজিটিভ রক্তের গ্রুপের পুরুষ Rh নেগেটিভ গ্রুপের মহিলাকে বিয়ে করলে তাঁদের একটাই সন্তান থাকার সম্ভবনা বেশি। কোন কারণে প্রথম সন্তানটি জন্ম না নিলে অর্থাৎ মিসক্যারেজ হলে পরবর্তীতে তাঁরা নিঃসন্তান থাকার সম্ভবনাও অত্যন্ত বেশি। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিয়ের আগেই উভয়ের রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের জন্য টেস্ট করা জরুরী।

থ্যালাসেমিয়া টেস্ট :

থ্যালাসেমিয়া হল রক্ত সম্পর্কিত একটি জিনগত রোগ, যা স্বামী-স্ত্রীর শরীর থেকে সন্তানের দেহে বাহিত হয়। এর ফলে অপত্য সন্তানের শরীরে হিমোগ্লোবিন তৈরি ব্যাহত হয়। এখনও পর্যন্ত এই রোগের কোন স্থায়ী সমাধান নেই। নিয়মিত রক্ত সঞ্চালনের মাধ্যমে শুধুমাত্র আয়ু বাড়ানো সম্ভব। এই রোগ মোকাবিলার প্রধান অস্ত্র সচেতনতা!

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে থ্যালাসেমিয়া সম্পর্কিত সচেতনতার অভাবের কারণে এখনও ভারতবর্ষ ও বাংলাদেশের হাজার হাজার শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে জন্মগ্রহণ করে। অথচ বিয়ের আগে সামান্য রক্ত পরীক্ষার পর সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমেই এই রোগকে শুধুমাত্র ‘কেরিয়ার’ বা ‘বাহক’ স্তরে সীমাবদ্ধ রাখা সম্ভব। তাই বিয়ের আগেই, ভবিষ্যৎ স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।

একটা সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমেই জেনে নেওয়া যায় স্বামী-স্ত্রী হিসাবে জুটি বাঁধতে চলা পুরুষ বা মহিলাটি থ্যালাসেমিয়ার বাহক বা কেরিয়ার কি না! থ্যালাসেমিয়া টেস্টে যদি দেখা যায়, যাঁরা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চলেছেন তাঁরা উভয়েই থ্যালাসেমিয়ার কেরিয়ার বা বাহক নন, তবে কোনো অসুবিধা নেই। উভয়ের যে কোনো একজন থ্যালাসেমিয়া কেরিয়ার বা বাহক হলেও কোনো অসুবিধা নেই। এক্ষেত্রে সন্তান থ্যালাসেমিয়া বাহক বা কেরিয়ার হতে পারে, কিন্তু থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হবে না। তবে উভয়েই থ্যালাসেমিয়া কেরিয়ার বা বাহক হলে ২৫% সম্ভবনা থাকে অপত্য সন্তান থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত হবে, ৫০% সম্ভাবনা থাকে অপত্য সন্তান থ্যালাসেমিয়া বাহক বা কেরিয়ার হবে।

সুতরাং দেখা যাচ্ছে, দুজনেই থ্যালাসেমিয়া বাহক বা কেরিয়ার না হলে কিংবা যে কোনো একজন কেরিয়ার হলে, কোনো অসুবিধা নেই। তবে উভয়েই বাহক বা কেরিয়ার হলে সন্তান না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। অথবা সন্তানধারণের প্রথম ১২ সপ্তাহের মধ্যেই অ্যামনিওসেন্টেসিস (amniocentesis) নামের একটি পরীক্ষা করে দেখে নিতে হবে, অপত্য ভ্রূণটি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত কি না।

বাবা ও মা উভয়েই থ্যালাসেমিয়া বা সিকল সেল অ্যানিমিয়া রোগের বাহক হলে সন্তান কীরূপ হবে, তার চিত্ররূপ।

সিকল সেল অ্যানিমিয়া টেস্ট :

থ্যালাসেমিয়ার মতোই আর একটি জিনবাহিত রক্তের রোগ হল সিকল সেল অ্যানিমিয়া। এই রোগে আমাদের লোহিত রক্ত কণিকার গঠন ত্রুটিযুক্ত হয়। ফলে দেহের প্রতিটি কলা-কোশে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ ব্যাহত হয়। ফলে অ্যানিমিয়া, শারীরিক দুর্বলতার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য অঙ্গের পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটে না। এই রোগের স্থায়ী কোনো সমাধান নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই থ্যালাসেমিয়া রোগীর মতোই নিয়মিত কিছু দিন অন্তর রক্ত সঞ্চালন করতে হয়।

স্বামী-স্ত্রী উভয়েই সিকল সেল অ্যানিমিয়ার বাহক হলে ২৫% সম্ভবনা থাকে যে অপত্য সন্তান এই রোগে আক্রান্ত হবে। তাই বিয়ের আগেই ছেলে বা মেয়ের সিকল সেল অ্যানিমিয়া আছে, সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত।

HIV এবং অন্যান্য সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD) এর জন্য মেডিকেল টেস্ট :

HIV এবং বেশ কিছু সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD) আছে যা প্রাণঘাতী এবং যৌন সংসর্গে বা শারীরিক সম্পর্কের কারণে ছড়ায়।

  • HIV এমন একটি রোগ যা আক্রান্ত ব্যক্তিকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ডেকে নিয়ে যায়। বর্তমানে HIV বা AIDS এর কোনো স্থায়ী সমাধান নেই।
  • গনোরিয়া এমন একটি যৌন রোগ যা সেক্সুয়াল ইন্টারকোর্স ছাড়াও অ্যানাল ও ওরাল সেক্সের মাধ্যমেও ছড়ায়। এমনকি গর্ভবতী অবস্থায় মা থেকে সন্তানেও ছড়ায়। তাছাড়া বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমেও সন্তানের মধ্যে বাহিত হয়।
  • সিফিলিসও এমন একটি যৌন রোগ যা প্রাথমিক অবস্থায় উপযুক্ত চিকিৎসা করালে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কিন্তু সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করালে চোখ, হৃৎপিন্ড, মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুও ডেকে আনে।
  • ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস হল এমন একটি যৌন রোগ যা সাধারণত মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়। এই রোগে যৌনাঙ্গ ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং চুলকানি, তীব্র জ্বালাভাব সৃষ্টি হয় ও বাজে দুর্গন্ধযুক্ত ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ হয়।

তাই বিয়ের আগেই HIV/AIDS এবং অন্যান্য সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিসিসেজ (STD)সম্পর্কিত টেস্টগুলি করে নেওয়া উচিত। কারণ আপনার পার্টনারের মেডিকেল স্ট্যাটাস জানা থাকলে আপনি নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন এবং প্রয়োজনে উপযুক্ত মেডিকেল সহায়তাও নিতে পারবেন। উপরন্ত, বিয়ের আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে, আপনি এই সম্পর্কে আবদ্ধ হবেন না কি পিছিয়ে আসবেন।

হেপাটাইটিস টেস্ট :

বিয়ের আগেই ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই হেপাটাইটিস এ, বি এবং সি সম্পর্কিত মেডিকেল টেস্টগুলি করিয়ে নেওয়া উচিত। কারণ এই সম্পর্কিত তথ্য উভয়ের কাছেই স্বচ্ছ থাকলে অনেক অবাঞ্ছিত হয়রানি বা সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

হেপাটাইটিস B ভাইরাস (HBV) বাহক অনেকেই অ্যাসিম্টোমেটিক এবং অধিকাংশই জানেন না তাঁরা হেপাটাইটিস আক্রান্ত। এই হেপাটাইটিস B ও হেপাটাইটিস C ভাইরাস HIV, সিফিলিস, গনোরিয়ার মতোই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হওয়ার মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তাছাড়া গর্ভাবস্থায় বা বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে মা থেকে সন্তানের মধ্যেও এই রোগ ছড়িয়ে যেতে পারে। তাই বিয়ের আগেই হেপাটাইটিস সম্পর্কিত মেডিকেল টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত। তবে সঠিক চিকিৎসা, সচেতনতা ও টীকা গ্রহণের মাধ্যমে এই রোগের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

ফার্টিলিটি টেস্ট :

উত্তর-আধুনিক এই সময়ে বন্ধ্যাত্ব সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যদিও এই সংক্রান্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা অনেকটাই উন্নত হয়েছে, তবুও তা স্বাভাবিক গর্ভধারণের বিকল্প নয়। দাম্পত্য জীবন শুরু করতে চলেছেন যাঁরা, তাঁদের যে কোনো একজনের সমস্যা থাকলেই সন্তান নিতে অসুবিধা সৃষ্টি হতে পারে। তবে আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সাধারণত মেয়েদেরকেই এর জন্য দায়ী করা হয়। কিন্তু সমস্যা ছেলেরও থাকতে পারে। আবার অনেকের বেশি বয়সে বিয়ে হওয়ার জন্য সন্তান ধারণ করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তাই সন্তান নেওয়া সম্পর্কিত পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে বিয়ের আগে ছেলে ও মেয়ে উভয়েরই ফার্টিলিটি টেস্ট করিয়ে নেওয়া উচিত বলে অনেকেই মনে করেন।

বিয়ের আগে ফার্টিলিটি টেস্ট হিসাবে পুরুষের সিমেন অ্যানালিসিস টেস্ট এবং মহিলার ওভিউলেশন টেস্ট করা হয়ে থাকে। তাছাড়া উভয়েরই হরমোন সম্পর্কিত কোনো সমস্যা আছে কি না তাও দেখে নেওয়া হয়। তাই প্রোল্যাক্টিন, FSH, LH, টেস্টোস্টেরন, প্রোজেস্টেরন, ইস্ট্রোজেন, TSH ইত্যাদি হরমোন টেস্ট করে নেওয়ার কথা অনেক চিকিৎসকই বলে থাকেন।

আরও পড়ুন :
১) গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস - সমস্যা, কারণ, ঝুঁকি ও সমাধান
২) নাক ডাকার কারণ ও সমাধান
৩) থ্যালাসেমিয়া : সচেতনতাই হাতিয়ার

ক্রনিক রোগ সম্পর্কিত স্ক্রিনিং :

বিয়ের আগে কিছু ক্রনিক রোগ যেমন ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, হাইপারটেনশন, থাইরয়েডের সমস্যা সম্পর্কিত টেস্টগুলি করার পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ এই সমস্যাগুলির নেগেটিভ প্রভাব দাম্পত্য জীবনে যেমন পরে, তেমনি গর্ভবস্থাতেও অনেক সমস্যার সৃষ্টি করে। তাছাড়া একে অপরের ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন সম্পর্কিত তথ্য জানা থাকলে বিবাহ-পরবর্তী জীবনে নিজেদের লাইফস্টাইল ও খাদ্যাভ্যাসে পরিকল্পনামাফিক পরিবর্তন আনা যায়। প্রয়োজনে উপযুক্ত মেডিকেল সহায়তা নিয়ে ঝুঁকিও কমানো যায়।

মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা :

একটি সুখী দাম্পত্য জীবন অতিবাহিত করার জন্য উভয়ের শারীরিক সুস্থতার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক সুস্থতাও সমান ভাবে কাম্য। শারীরিক সুস্থতাকে সাধারণত প্রাধান্য দেওয়া হলেও, মানসিক অসুস্থতাকে অনেক সময়ই এড়িয়ে যাওয়া হয়, গুরুত্ব না দিয়ে অবহেলা করা হয়। তাই বিয়ের আগে উভয়ের মানসিক সুস্থতা সম্পর্কেও নিশ্চিত হয়ে নেওয়া উচিত। মনে রাখবেন, বাবা-মায়ের কিছু কিছু মানসিক সমস্যা সন্তানের মধ্যেও সঞ্চারিত হতে পারে। প্রয়োজনে মনোবিদের পরামর্শও নেওয়া যেতে পারে।

সুতরাং বুঝতেই পারছেন, অবহেলা না করে বিয়ের আগে মেডিকেল টেস্টগুলি করে নিলে, বিবাহ পরবর্তী অনেক সমস্যাই এড়ানো সম্ভব। পাত্রপক্ষ বা মেয়েপক্ষ কী ভাববে, এই সংশয় দূরে রেখে উল্লেখিত মেডিকেল টেস্টগুলি করে নেওয়া ভবিষ্যৎ জীবনের জন্য অত্যন্ত আবশ্যক। প্রয়োজনে মেডিকেল কাউন্সিলিংয়ের জন্য চিকিৎসকের পরামর্শও নিতে পারেন।

সুস্থ থাকুন, ভালো থাকুন।


ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

This Post Has 14 Comments

  1. Subhashis

    Khub sundor helpful and informative.👍

  2. Santanu Patra

    Khub valo darkari tothyo

মন্তব্য করুন