বন্ধ নাক আপনার অস্বস্তির কারণ তো বটেই, সঙ্গে বিরক্তিকরও। নাক বন্ধ থাকলে কোনো কিছুই ভালো লাগে না। মেজাজ চরমে থাকে। অথচ শীত আসতেই বন্ধ নাক, মাথা ভার এইসব সমস্যা উঁকি দিতে শুরু করেছে। অনেকে মনে করেন, সর্দি বা শ্লেষ্মার কারণে নাক বন্ধ হয়ে আসে। তবে সাইনাসের স্ফীত রক্তনালীর কারণেই প্রধানত নাক বন্ধের সমস্যা হয়ে থাকে। সর্দি, ফ্লু, অ্যালার্জি বিভিন্ন কারণে বন্ধ নাকের সমস্যা হতে পারে। সমস্যা যে কারণেই হোক, বন্ধ নাক খোলার বেশ কিছু সাধারণ উপায় আছে। বন্ধ নাক খোলার উপায় নিয়েই এখানে বেশ কিছু টোটকা বা পদ্ধতি আলোচনা করা হল –
- নাক বন্ধের সমস্যায় হিউমিডিফাইয়ার ব্যবহারে উপকার পাওয়া যায়। এটির ব্যবহার নাক বন্ধের সমস্যা দূর করার সঙ্গে সঙ্গে সাইনাসের যন্ত্রণাও দূর করে। হিউমিডিফাইয়ার জলকে বাষ্পে পরিণত করে বাতাসের আর্দ্রতা বাড়িয়ে দেয়। আর্দ্র বাতাসে শ্বাস নেওয়ার ফলে সাইনাসের স্ফীত রক্তনালী প্রশমিত হয়। ফলে নাক বন্ধের সমস্যাতে উপকার পাওয়া যায়। বন্ধ নাক খুলে যায়। তবে হিউমিডিফাইয়ারের অত্যধিক ব্যবহার শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
- গরম জলে স্নান করলে নাক বন্ধের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়। গরম জল থেকে জলীয় বাষ্প নাকের মধ্যে প্রবেশ করে শ্লেষ্মা পাতলা করে। ফলে নাক পরিষ্কার করতে সুবিধা হয়। বেশ কিছুক্ষণের জন্য হলেও নাক বন্ধের সমস্যা প্রশমিত হয়। অসহ্য অবস্থা থেকে আরাম পাওয়া যায়।
- নাক বন্ধের সমস্যায় আরাম পেতে গরম জলের ভাপ নেওয়া সবথেকে বেশি কার্যকর। একটা বড় বাটি বা গামলায় গরম জল নিন। তোয়ালে দিয়ে মাথা ঢেকে গরম জলের দিকে মাথাটা নিচু করে গভীর শ্বাস নিয়ে জলীয় বাষ্পটি টেনে নিন। বন্ধ নাক খুলতে গরম জলের ভাপ খুবই ভালো কাজ দেয়। দিনে তিন-চার বার এইরূপ করুন। উপকার পাবেন। আরও ভালো ফল পেতে গরম জলে কয়েক ফোঁটা ইউক্যালিপটাস তেল যোগ করে নিতে পারেন।
- বন্ধ নাকের সমস্যা থাকলে পর্যাপ্ত জল বা পানীয় পান করুন। সাধারণ সর্দি বা ঠান্ডা লাগলেও পর্যাপ্ত জল খান। শরীরে ফ্লুইডের পরিমাণ পর্যাপ্ত থাকলে শ্লেষ্মা পাতলা হয়। নাসাল প্যাসেজের মিউকাস পাতলা হয়।মিউকাস ও শ্লেষ্মা নাসাপথ থেকে সহজে বের হয়ে যায়। নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা সৃষ্টি হয় না। সাইনাসের ওপর চাপ কমে, প্রদাহ বা জ্বালাভাব সৃষ্টি হয় না। তাই বন্ধ নাক খুলতে পর্যাপ্ত জল বা পানীয় পান করুন। গরম জল, চা, কফি, স্বাস্থ্যকর চিকেন স্যুপ প্রভৃতি পান করতে পারেন।
- একটি তোয়ালে গরম জলে ভিজিয়ে নিন। তোয়ালে থেকে সব জল নিংড়ে ফেলে দিন। তারপর চিত হয়ে শুয়ে নাক, মুখ, কপাল ওই তোয়ালে দিয়ে ঢেকে দিন। এভাবেও বন্ধ নাকের অস্বস্তিতে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
- ঠান্ডা লেগে নাক বন্ধ হলে নাসাল স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। নাসাল স্যালাইন স্প্রে ব্যবহার করলে বন্ধ নাকের মিউকাস আলগা হয়। ফলে সহজে বের হয়ে যায় ও নাক পরিষ্কার থাকে। বাজারে বা অনলাইন শপে বিভিন্ন ধরণের নাসাল স্প্রে পাওয়া যায়। তবে নাসাল স্প্রে ব্যবহারের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া বাঞ্চনীয়।
- বন্ধ নাক খুলতে নেটি পট (Neti Pot) ব্যবহার করা যেতে পারে। অনেকে ভয় পেলেও নেটি পট ব্যবহার করা খুব একটা শক্ত কাজ নয়। ইউটিউবে এই নিয়ে অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। সিঙ্ক বা বেসিনের দিকে একদিক কত করে মাথা নিচু করুন। তারপর তারপর নেটি পটের খোলা মুখটা ওপরের দিকের নাসারন্ধ্রে ঢুকিয়ে দিন। এবার মুখ দিয়ে শ্বাস নিতে নিতে ওপরের নাসারন্ধ্র দিয়ে জল টানুন এবং অপর নাসারন্ধ্র দিয়ে বের করুন। অন্য নাসারন্ধ্র দিয়েও একই পদ্ধতিতে নাক পরিষ্কার করুন। এভাবে বেশ কয়েকবার করলে মিউকাসসহ নাকের নোংরা বের হয়ে যাবে। ফলে বন্ধ নাক খুলে যাবে। তবে স্যালাইন বা পরিষ্কার জল ব্যবহার করবেন, সম্ভব হলে ফুটিয়ে নেবেন।
- ঈষদ-উষ্ণ লবণ-জলে গার্গল করতে পারেন। গলা ব্যথার সমস্যা যেমন কমে, তেমনি নাক বন্ধের সমস্যাতেও আরাম পাওয়া যায়।
- দুই-তিন কোয়া রসুন দিয়ে জল ফুটিয়ে, সেই জল দিনে দুই-তিনবার খেলে বন্ধ নাকের সমস্যায় উপকার পাওয়া যায়।
- সর্বোপরি, সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ঔষধ নিন। চিকিৎসকের থেকে পরামর্শ নিন। সর্দি বা ঠান্ডা লাগা ছাড়াও অনেক সময় অ্যালার্জির কারণে নাক বন্ধের সমস্যা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
আরও পড়ুন : (১) আদা খাওয়ার উপকারিতা (২) কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার উপকারিতা (৩) নাক ডাকার কারণ ও সমাধান (৪) বগলের কালো দাগ দূর করবেন কীভাবে? (৫) বিয়ের আগে কী কী মেডিকেল টেস্ট করা উচিত?
খুব ভালো ও সহজ উপায়। আশা করছি উপকার পাবো।
Pingback: কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার ১২টি উপকারিতা | কাঁচা লঙ্কার পুষ্টিগুণ
I was pretty pleased to discover this great site. I want to to thank you for ones time due to this fantastic read!! I definitely appreciated every part of it and I have you book marked to look at new stuff on your web site.