You are currently viewing গান শোনার ৮টি উপকারিতা | গান শোনার উপকারিতা
গান শোনার উপকারিতা

গান শোনার ৮টি উপকারিতা | গান শোনার উপকারিতা

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

গান শোনার উপকারিতা নিয়ে হঠাৎ কেন লিখতে বসলাম, সেটা ভাবছেন তো? কারণ, আজ ২১ জুন – World Music Day তথা বিশ্ব সঙ্গীত দিবস! গানকে উৎসর্গ করে গোটা একটা দিন! তাই গান শোনার উপকারিতা নিয়ে অল্প কিছু কথা।

গান হল প্রাণের আরাম। গান শুধু প্রাণের আরাম প্রাণের ভাষা তাই নয়, গান শোনার উপকারিতাও অনেক। আমাদের আবেগ, অনুভূতির ছন্দে মিশে থাকে প্রিয় গানের সুর। গান ভালোবাসেন না, এমন মানুষ খুবই বিরল। মন খারাপেই হোক, বা আনন্দেই হোক, গানই হল সর্বক্ষণের ওষুধ।

বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন জন গান শোনার উপকারিতা নিয়ে গবেষণা করেছেন। গান শোনার মনস্তাত্বিক ও শারীরিক প্রভাব নিয়ে নাড়াচাড়া করেছেন। এমনকি চিকিৎসাক্ষেত্রে ‘মিউজিক থেরাপি’ নামের নতুন এক শব্দযুগল যুক্ত হয়েছে। গান শোনার উপকারিতা তথা ফলও পাওয়া গেছে হাতেনাতে।

আমাদের মস্তিষ্ক এমন ভাবেই তৈরি যে, আমরা শব্দদূষণ ও সুর-গান-তালের পার্থক্য খুব সহজেই বুঝতে পারি। আবার গানের বিভিন্ন রকমফেরও আমাদের বিভিন্নভাবে উত্তেজিত করে। দ্রুত লয়ের গান যেমন আমাদের হার্ট বিট বাড়িয়ে দেয়, তেমনি ধীর লয়ের গান আমাদের ধীর-স্থির হতে সাহায্য করে।

বিভিন্ন গবেষণা ও পর্যবেক্ষণকে মাথায় রেখে গান শোনার উপকারিতা বা প্রভাবের কথা গবেষক ও চিকিৎসকরা স্বীকার করেছেন। কাজের ফাঁকে বা অবসরে আমরা অভ্যাস বা নিখাদ ভালোবাসায় গান শুনি। কিন্তু গান শোনার উপকারিতাগুলি আমাদের উপরি পাওনা হিসাবে যোগ হয়। তেমনি কিছু উপকারিতার কথা আজ উল্লেখ করা হল, ‘শরীর ও স্বাস্থ্য‘-এর পাতায় –

১) হৃৎপিন্ড সুস্থ রাখতে গান শোনার উপকারিতা আছে

গবেষণায় দেখা গেছে, যখন ধীর লয়ের কোনো গান চলে তখন রক্ত স্বাভাবিক ভাবে প্রবাহিত হয়। গান হার্ট রেট কমায়, উচ্চ রক্তচাপ কমায়। বেশ কিছুক্ষণ গান শোনার ফলে ‘স্ট্রেস হরমোন’ কর্টিসলের ক্ষরণ কমে। উল্টোদিকে ‘হ্যাপি হরমোন’ সেরোটোনিন ও এন্ডোরফিনের ক্ষরণ বাড়ে। ফলে দুশ্চিন্তা, মানসিক চাপ, উদ্বেগ কমে। সর্বোপরি, হৃৎপিন্ডের সুস্থতা বজায় রাখতে গান শোনার উপকারিতা অনেক। তাছাড়া কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতেও পরোক্ষভাবে সাহায্য করে।

২) গান শোনার ফলে আমাদের মুড (Mood) ভালো হয়

গবেষণায় দেখা গেছে, আমাদের মুড ভালো রাখতে গান শোনার উপকারিতা আছে। গান আমাদের অনুভবগুলিকে প্রভাবিত করে আমাদের খুশি রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে রিল্যাক্স রাখতে গান সাহায্য করে। আমাদের খারাপ মুডকে ভালো করতে গানের জুড়ি মেলা ভাড়।

আরও পড়ুন : বগলের কালো দাগ দূর করার ১২টি ঘরোয়া উপায়

৩) গান শোনার ফলে আমাদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমে

গান আমাদের মানসিক চাপ ও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। পছন্দের গান শোনার ফলে আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বৃদ্ধি পায়। এই ডোপামিন আমাদের দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ ও ডিপ্রেশন কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া গান শোনার ফলে শরীরে কর্টিসল হরমোনের ক্ষরণ কমে যাওয়া। এই কর্টিসল লেভেল কমে যাওয়ার ফলে মানসিক চাপ হ্রাস পায়।

৪) স্মৃতিশক্তি বজায় রাখতে গান শোনার উপকারিতা আছে

আমাদের ভালো-খারাপ নানান ঘটনার সঙ্গে আমরা গানকে সম্পৃক্ত করে রাখি। বিভিন্ন গান আমাদের বিভিন্ন ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। তাই আমাদের স্মৃতিশক্তির সঙ্গে গানের সম্পর্ক নিয়ে নানান গবেষণা চলছে। স্মৃতিশক্তি লোপ পেলে স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে গানের ব্যবহার করা যায় কিনা, সেই নিয়ে গবেষণা চলছে।

তাছাড়া গবেষণায় দেখা গেছে, সাধারণ স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও গান শোনার অনেক উপকার। অ্যালঝাইমার্স ও ডিমেনশিয়া রোগে মিউজিক থেরাপি কিছু সিম্পটমস্ হ্রাস করে। উত্তেজিত রোগীকে শান্ত করতে সাহায্য করে মিউজিক থেরাপি।

৫) গান যন্ত্রনা উপশমে সাহায্য করে

যন্ত্রনা উপশমে বা Pain Management-এ গান শোনার অনেক উপকার লক্ষ্য করা গেছে। মিউজিক থেরাপি মস্তিষ্কের যন্ত্রনা কেন্দ্রকে প্রভাবিত করে। ফলে যন্ত্রনার তীব্রতা অনেকটাই কম অনুভূত হয়।

৬) গান শোনার ফলে শারীরিক কসরত করার ক্ষমতা বাড়ে

শারীরিক কসরত বা পরিশ্রম করার সময় গান শোনার ফলে, কসরত বা পরিশ্রম করার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষত ব্যায়াম করার সময় এটা হয়তো অনেকেই খেয়াল করে থাকবেন। গান শোনার ফলে ব্যায়াম বা জিম করার সময় আলাদা এক জোশ কাজ করে। খেলোয়াড়দের প্রাক্টিসের সময় মোটিভেট করার জন্য তাই অনেক সময় গান শোনানো হয়।

★ আরও পড়ুন – সাইকেল চালানোর উপকারিতা

৭) গান কম খেতে সাহায্য করে

ওজন কমানো যদি আপনার লক্ষ্য হয় এবং আপনি যদি পেটুক হন, তবে খাওয়ার সময় গান শোনার উপকারিতা আছে। খাওয়ার সময় হালকা মিউজিক চললে খাওয়ার বেগ হ্রাস পায়। আর ধীর খাওয়ার ফলে এমনিই পরিমাণে কম খাওয়া হয়। তাই ওজন কমানোর জন্য অল্প আলোয় ধীর লয়ের গান চালিয়ে খাওয়া বেশ উপকারি।

৮) অনিদ্রা দূর করতে গান শোনার উপকারিতা আছে

বর্তমান সময়ে অনেকেই ইনসোমনিয়া বা অনিদ্রা রোগে ভুগছেন। দীর্ঘক্ষণ বিছানায় এদিক ওদিক করার পরেও ঘুম আসে না। তবে গবেষকরা বলছেন, এক্ষেত্রে গান শোনা খুব উপযোগী হতে পারে।

ক্লাসিক্যাল মিউজিক বা ধীর লয়ের বিভিন্ন গান অনিদ্রা রোধে বেশ উপকারি। দেখা গেছে, ঘুমাতে যাওয়ার আগে গান শোনার ফলে ঘুম তাড়াতাড়ি আসে। ঘুমের মানও ভালো হয়।


ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

মন্তব্য করুন