You are currently viewing খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খাওয়ার উপকারিতা
খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুরের উপকারিতা | খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

খেজুরের উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অনেক। আকারে ছোট, কিন্তু গুণে বড়ো – এটাই খেজুরের মূল বিশেষত্ব। খেজুর রসের যেমন বিভিন্ন উপকারিতা আছে, তেমনি ফল হিসাবে খেজুর খাওয়ারও অনেক উপকারিতা। খেজুর খেতেও মিষ্টি ও সুস্বাদু। উচ্চ ক্যালোরি ও ম্যাক্রোনিউট্রিয়েন্টসে ভরপুর খেজুর খাওয়ার ফলে পর্যাপ্ত শক্তি পাওয়া যায়। তাছাড়া খেজুর খাওয়ার আরও অনেক উপকারিতা আছে। তাই প্রাচীনকাল থেকেই খেজুর খুবই জনপ্রিয় একটি ফল। নিয়মিত খেজুর খাওয়া শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভালো।

খেজুরের উপকারিতা :

১) খেজুর পুষ্টিগুণে ভরপুর

ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর খেজুরের পুষ্টিগুণ অনেক। খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন বি-৬ (Pyridoxine), ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-কে থাকে। ফাইবার ও শর্করাও খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। ফ্রুকটোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি রক্তে শর্করার পরিমাণ বাড়ায়। খেজুর ফলকে চিনির বিকল্প হিসেবে ধরা যেতে পারে। যারা চিনি খান না তারা খেজুর, খেজুরের রস ও খেজুরের গুড় খেতে পারেন। ডায়াবেটিস থাকলে প্রচলিত খেজুরের বদলে শুকনো খেজুর খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।

চারটি বা ৩০ গ্রাম পরিমাণ খেজুরে আছে ৯০ ক্যালোরি শক্তি, এক গ্রাম প্রোটিন, ১৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২.৮ গ্রাম ফাইবার এবং আরও অন্যান্য পুষ্টি উপাদান। খেজুর শক্তির একটি ভালো উৎস। তাই খেজুর খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরের ক্লান্তিভাব দূর হয়। খেজুরে আছে প্রচুর ভিটামিন B, যা ভিটামিন B6, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক। তাছাড়া খেজুরে থাকে লিউটিন ও জিক্সাথিন, যা আমাদের চোখের রেটিনা ভালো রাখতে সাহায্য করে।

২) মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খেজুরের উপকারিতা আছে

দেখা গেছে, নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে IL-6 (Interleukin 6) এর মাত্রা হ্রাস পায়। এই IL-6 (Interleukin 6)-এর মাত্রাবৃদ্ধিই অ্যালঝাইমারস্-এর মতো স্মৃতিক্ষয় রোগের জন্য দায়ী। তাছাড়া এটাও দেখা গেছে যে, নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে উদ্বেগ কমে, স্মৃতিশক্তি ও শেখার ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। অর্থাৎ খেজুর আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে, আমাদের প্রাণবন্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা নেয়।

◆ Amazon থেকে ভালো কোয়ালিটির খেঁজুর কিনতে এখানে ক্লিক করুন – Buy Now

৩) খেজুরে পর্যাপ্ত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হল এমন একটি উপাদান যা আমাদের শরীরের ফ্রি-রেডিক্যালস্ দূর করতে প্রভূত সাহায্য করে। খেজুরে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, বিশেষত অন্যান্য শুকনো খাদ্যসামগ্রীর তুলনায়। খেজুর ক্যারোটিনয়েড (Carotenoids), ফ্ল্যাভোনয়েড (Flavonoids), ফেনোলিক অ্যাসিড (Phenolic Acid) প্রভৃতি অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। ফলে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, বিভিন্ন ক্যান্সার, শরীরের জ্বালাভাব প্রভৃতি থেকে অনেকক্ষেত্রেই রেহাই পাওয়া যায়।

৪) কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়

প্রচুর পরিমাণ ফাইবার থাকার কারণে, নিয়মিত খেজুর খেলে বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কোনো ধরনের পেটের রোগই আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে না। অর্থাৎ নিয়মিত খেজুর খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ হয়। প্রতিদিন সকালে ৪-৫ টি খেজুর খেলে বা রাত্রে জলে ভিজিয়ে রেখে সেই জল খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্যে উপকার পাওয়া যায়।

তাছাড়া একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৩টি করে খেজুর খেলে শরীরের উপকারী ব্যাকটেরিয়ার মাত্রা বৃদ্ধি পায়। ফলে বদহজম, কোলাইটিস ও হেমোরয়েডের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।

■ আরও পড়ুন :

বিয়ের আগে কোন কোন মেডিকেল টেস্ট করা উচিত?
বগলের কালো দাগ দূর করার উপায়।
নিয়মিত সাইকেল চালানোর উপকারিতা।
কাঁচা লঙ্কা খাওয়ার উপকারিতা।
গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার কারণ ও নিয়ন্ত্রণের উপায়।

৫) নিয়মিত খেজুর খাওয়ায় ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমে

বর্তমান সময়ের সবথেকে ভয়ঙ্কর বা রাজ রোগ হল ক্যান্সার। বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন। খাদ্য হিসেবে খেজুর ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। বিশেষত কোলন ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার রোধে এটি সহায়ক। খেজুরে উপস্থিত D-glucan এক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। তাছাড়া খেজুরে উপস্থিত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট দেহের ফ্রি-রেডিক্যালস্ দূর করতে সাহায্য করে। ফলে ক্যান্সার ও টিউমার হওয়ার ঝুঁকি কমে। তাই যারা নিয়মিত খেজুর খান, তাদের ক্ষেত্রে ক্যান্সারের হওয়ার সম্ভবনা কমে।

৬) দৃষ্টিশক্তি ঠিক রাখতে সাহায্য করে

খেজুরের মধ্যে রয়েছে ভিটামিন A ও লিউটিন সহ আরও কিছু কার্যকারী উপাদান যা রেটিনার স্বাস্থ্যকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। এর ফলে চোখের জ্যোতি বা দৃষ্টিশক্তি ঠিক থাকে। খেজুরে থাকা ভিটামিন A, Night Blindness বা রাতকানা রোগ প্রতিরোধ করে।

৭) নিয়মিত খেজুর গ্রহণ চুল পড়ার সমস্যায় কার্যকরী ভূমিকা রাখে

চুল পড়ার সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে, এমন দাবি করা তথাকথিত অনেক ওষুধের থেকে নিয়মিত খেজুর খাওয়া অনেক ভালো বিকল্প হতে পারে। খেজুরে প্রচুর আয়রন থাকে, যা আপনার চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারি। নিয়মিত খেজুর খাওয়ার ফলে রক্তে আয়রনের পরিমাণ ঠিক থাকে এবং মাথার ত্বকে অক্সিজেন সমৃদ্ধ রক্তের প্রবাহ ভালো হয়। ফলে নতুন চুল গজাতে সুবিধাজনক হয় এবং চুল ঝরে পড়ার হারও অনেকাংশে কমে।

৮) ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেজুরের উপকারিতা আছে

খেজুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন C ও ভিটামিন D থাকে। ফলে ত্বকের সুস্থতা ও উজ্জ্বলতার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির যোগান সুনিশ্চিত হয়। তাই ত্বকের বয়স ধরে রাখতে বা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখতে নিয়মিত খেজুর খাওয়া বিশেষ উপকারি।

খেজুরে উপস্থিত অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও বার্ধক্য বিলম্বিত করে যৌবন ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে মেলানিন জমে কালো ছোপ হওয়ার হাত থেকেও রক্ষা করে নিয়মিত খেজুর খাওয়ার অভ্যাস।

৯) আমাদের স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জীবিত রাখে

আমাদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও বাইরের পরিবেশের সঙ্গে তথ্য বা সিগন্যাল আদানপ্রদানের প্রধান কাজের দায়িত্ব স্নায়ুতন্ত্রের। স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা আরও অন্যান্য সমস্যা ডেকে আনে। এই স্নায়ুতন্ত্রকে ঠিক রাখতে খনিজ হিসাবে পটাশিয়ামের গুরুত্ব অনেক। খেজুরে এই পটাশিয়াম পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে। ফলে স্নায়ুকোষের মধ্যে তথ্যের আদানপ্রদান সহজতর হয়।


ভালোবাসা ছড়িয়ে দিন

This Post Has 3 Comments

  1. Papiya dasmondal

    Thank you for this information

মন্তব্য করুন